বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
তিথীর পাশে থেকে উঠে ফ্রেশ হতে বাথরুমে গেল রাজ।তিথী এখনো গভীর ঘুমে মগ্ন।ফ্রেশ হয়ে রাজ বারান্দায় এসে দাড়ালো। আজ অফিস যেতে পারবেনা রাজ।তাই অফিসে কল করে জানিয়ে দিল।
নাস্তা সেরে বাহিরে একটু হাটাহাটি করছে রাজ।
তিথী ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে এলো।
আম্মু তাড়াতাড়ি নাস্তা দাও,খুব ক্ষুদা পেয়েছেএই যে মা দিচ্ছি। নে...খাবারটা খেয়ে নে।
মা রাজ কোথায়?
জামাই বাবাজি তো বাগানে হাঁটছে।
নাস্তা শেষে তিথী বাগানে এসে দেখতে পেলো রাজ গিটার হাতে গান গাইছে :
আমি তোমার আকাশে নিজেকে হারাতে চাই...
স্বপ্নের বর্নিল রঙে তোমাকে রাঙাতে চাই...
তুমি আসবে কি ফিরে, ভালবাসবে কি আমাকে
আমি নিজের করে চাই তোমাকে....
তুমি ভালবাসবে কি আমাকে...
তুমি ভালবাসবে কি আমাকে...
আমি তোমার শহরে মুক্ত বাতাসে ভাসি
আমি তোমার কাছে বারবার ফিরে আসি
তোমার মুক্ত ভালবাসায় আমি দূরে হারিয়ে যাই
আমি তোমার চোখেতে নিজেকে খুজে পাই
তুমি ভালবাসবে কি আমাকে....
তুমি ভালবাসবে কি আমাকে....
আমি তোমায় আপন করে চাই
আমি তোমায় নিজের করে চাই
তুমি ভালবাসবে কি আমাকে.... ও প্রিয়...
রাজের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে গান শুনছিল তিথী।রাজের গান গাওয়া শেষ হতেই তিথীর দিকে চোখ পড়লো তার।
কি ব্যাপার? তুমি এখানে দাঁড়িয়ে?
আসলে তোমার গান শুনছিলাম। তুমিতো অনেক সুন্দর গান গাইতে পারো।
ধন্যবাদ মিসেস তিথী।
আচ্ছা রাজ তুমি কি কখনো কাউকে ভালবেসেছো?
রাজ কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেল।
হঠাৎ এই প্রশ্ন?
না এমনি, জিজ্ঞেস করলাম আর কি।
ও আচ্ছা।
দুপুরের খাবার খেয়ে তিথী আর রাজ বাসার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লো।
তিথী আজ একটা জায়গায় যাবে?
কোথায়?
আমার প্রিয় একটা জায়গায়। চলো তোমার ভালো লাগবে।
একটা নদীর পাশের রাস্তায় গাড়ি এসে থামল।রাজ গাড়ি থেকে বেরিয়ে হাটা শুরু করলো।
তিথীও রাজের পিছু পিছু হাটতে লাগলো।
একটা জায়গায় এসে রাজ দাড়ালো।তিথী সামনে তাকিয়ে দেখলো খোলা আকাশের নিচে নদীর তীরে একটা ছোট ঘর।ঘরের পাশে কিছু বেলী আর শিউলী ফুলের গাছ।ঠিক তার পাশে একটি দোলনা।ঘরের দরজার সামনে ছোট ছোট গোলাপের গাছ।একটা মিষ্টি সুভাস নাকে এসে লাগছে।
রাজ তিথীকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করল। ঘরটা বাহিরে দেখে যেমন মনে হয়, ভিতরে পুরোটাই আলাদা।
ভিতরে একদিকে একটা টেবিল,টেবিলের দু দিকে দুটো চেয়ার।মাঝে কিছু ক্যান্ডেল আর একটি ফুলদানিতে কিছু রক্তলাল গোলাপ।
চারদিকে দেয়ালে ছোট ছোট বিভিন্ন সৌন্দর্যের পেন্টিং ঝুলানো।একপাশে একটি একুরিয়াম। কিন্তু রাজ সেখানে বসলোনা।তিথীর হাত ধরে ঘরের ভিতরের একটি দরজা দিয়ে অন্য একটি রুমে প্রবেশ করল। এই রুমটি দেখে আরো অবাক তিথী।চারপাশে কাচের দেয়ালের একটি ঘর।এখান থেকে নদীটি স্পষ্ট দেখা যায়। ঘরে একটি খাট,সোফা আর একটি টেবিলও আছে।রুমের ভিতর একটি কাচের বাথরুম আছে। তিথীর কাছে জিনিসটি মোটেও ভালো লাগলোনা।এতো সুন্দর ঘর অথচ বাহির হতে সব দেখা যাবে।
রাজ তিথীর মুখ দেখে হেসে ফেললো।
ভয় নেই এটা সাধারণ কাচের ঘর নয়।তুমি বাহিরের সবটা দেখতে পেলেও।বাহির থেকে ভিতরের কিছু দেখা যাবেনা।
ও...তাই বলো।
জানো এই জায়গাটা আমার অনেক প্রিয়। তুমি সকালে জিজ্ঞেস করেছিলে আমি কখনো ভালবেসেছি কি না।
হ্যা আমি এক সময় একজনকে খুব ভালবাসতাম।
তাকেই নিজের পৃথিবী বানিয়ে নিয়েছিলাম।ওর পছন্দ মতোই এই নদীর তীরে ঘর বানিয়েছিলাম।ও নিজের হাতেই সবটা সাজিয়ে ছিল।কথা ছিল প্রতি সপ্তাহে একটা দিন এখানে দুজনে ঘুরতে আসব।রাতে দুজনে চন্দ্র স্নান করবো।সকালের রক্তিম আলোয় পাখিদের গান শুনাবো।
বৃষ্টির শব্দে দুজনে পায়ে পা মিলাবো।শিউলি ফুলে তার আচল ভরিয়ে দিব।কিন্তু....
কিন্তু কি?
বলবো কোন একদিন।
কেনো?আজ নয় কেনো?
চলো যাওয়া যাক।
গাড়ি এসে বাড়ির সামনে দাড়িয়ে গেল।
রাজ আর তিথী গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে গেলো।
আজ রাতে তিথী আর রাজ একই বিছানায় শুয়ে পরেছে। তবে মাঝ বরাবর পাকিস্তান আর ইন্ডিয়ার বর্ডার। গভীর রাতে রাজ বুঝতে পারল তিথী তাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। আর বর্ডার মানে কোল বালিশ মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে।রাজ মুচকি হেসে আবার ঘুমিয়ে পড়লো।
খুব সকালে তিথীর ঘুম ভাঙ্গলে নিজেকে রাজের বাহুডোরে আবিষ্কার করলো।
সন্তপর্ণে রাজের হাত সরিয়ে উঠে গেলো সে।
বাড়ীর সকলে এখনো ঘুমে
রান্না ঘরে গিয়ে এক কাপ কফি বানিয়ে নিয়ে বারান্দায় এসে বসলো তিথী। আজ আকাশটা বড্ড মেঘলা।তিথী খুব করে চাইছে আজ বৃষ্টি আসুক।অনেক দিন বৃষ্টিতে ভিজা হয়না।
এক সময় ঝমঝম করে বৃষ্টি নেমে এলো।
তিথী রুমে গিয়ে একটা সাদা শাড়ী পরে নিলো।দু পায়ে নুপুর পড়লো সাথে আলতায় পা রাঙ্গিয়ে নিলো।চুল গুলো ছেড়ে দিয়ে, ফুলদানি থেকে দুটো গোলাপ চুলে পড়ে নিয়ে রেডি হলো।
সিড়ি বেয়ে ছাদে উঠে গেলো সে।
বৃষ্টির ধারা মনের সুখে ভিজতে লাগলো তিথী...
চলবে.....
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now